আজ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন | ভোট হচ্ছে ২৯৯টিতে

আজ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন | ভোট হচ্ছে ২৯৯টিতে

আগামী পাঁচ বছরের জন্য দেশ পরিচালনায় জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে আজ (রবিবার) সারাদেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটাররা বেছে নেবেন নিজ নিজ এলাকার প্রতিনিধি। সকাল ৮ টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মধ্যে। অবশ্য দল দুটির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নিবন্ধিত এক ডজনেরও বেশি দল ভোটে রয়েছে। আর নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে মোট ৩৯টি রাজনৈতিক দল।

আজ দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ভোট হচ্ছে ২৯৯টিতে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে গাইবান্ধা-৩ আসনে রবিবার ভোট হচ্ছে না।

নির্বাচনকে সফল করতে সব ধরনের আয়োজন সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির পক্ষ থেকে ভয়ভীতি উপেক্ষা করে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচনি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য।

এদিকে দীর্ঘ দশ বছর পর সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে প্রচণ্ড এ শীতের মধ্যেও সারাদেশে বইছে নির্বাচনি উত্তাপ। তবে ভোট নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে যেমন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে তেমনি রয়েছে সহিংসতার শঙ্কা। সুষ্ঠুভাব ভোটগ্রহণ ও পছন্দের প্রার্থীদের ভােট দিয়ে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন অনেক ভোটার। আর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পরস্পরের বিরুদ্ধে ভােট বানচাল করারও অভিযােগ তুলেছে।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ২৭২ জন ও বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ২৮২ জন লড়ছেন। এর মধ্যে সরাসরি আওয়ামী লীগ দলীয় ২৬০ জন ও বিএনপির ২৫৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা বাকিরা জোটভুক্ত শরিক দলের। এ নির্বাচন জাতীয় ঐক্যফ্রট ও ২০ দল থাকা ৮টি নিবন্ধিত রাজনতিক দল ধানের শীষ প্রতীক লড়ছন। আর মহাজাট ও ১৪ দলীয় জোট থাকা ৫টি দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নৌকা প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন। কারাগারে থাকায় এবারই প্রথম বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভোটে অংশ নিতে ও ভােট দিতে পারছেন না।

এর আগে সর্বশেষ ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশ নিয়েছিল। এরপর তত্ত্ববধায়ক ইস্যুত ২০১৪ সালর ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচন বিএনপিসহ বেশিরভাগ দল বর্জন করে। ওই নির্বাচন আওয়ামী লীগসহ ১২টি দল অংশ নেয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। ২০০৮ সালের পর এবার নিবন্ধিত সবকটি রাজনৈতিক দল অংশ নেওয়ায় দেশ ও বিদেশে এ নির্বাচন বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। সুষ্ঠু ও নির্ভয়ে ভোটগ্রহণের উপর গুরুত্বারােপ করে ইতোমধ্য বিবৃতি দিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থা। বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকরা এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছেন।

গত ৮ নভেম্বর এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিএনপি, যুক্তফ্রটসহ কয়কটি দলের দাবির মুখে পুনঃতফসিল ঘোষণা করে ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করা হয়। জাতীয় ঐক্যফ্রটের প্রার্থী মারা যাওয়ায় গাইবান্ধা-৩ আসনে ২৭ জানুয়ারি ভোটেরর পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।

গত ১০ ডিসেম্বর শুরু হওয়ার পর টানা ১৯দিনের প্রচার-প্রচারণায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এতে মারা গেছে অন্তত ৯ জন। শুক্রবার সকাল ৮টার পর থেকে সব ধরনের প্রচার বন্ধ রয়েছে। শনিবার দেশের সবকটি ভােটকেন্দ্রে নির্বাচনি মালামাল পৌঁছে গেছে। ভােটের সময় গুজব ও প্রভাব বিস্তার বন্ধে মােবাইল নেটওয়ার্ক ডাউন করে বিদ্যামান ফাের জি থেকে নামিয়ে টু জি করা হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে মােবাইল ব্যাংকিং। একইভাবে শনিবার মধ্যরাত থেকে রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন চলাচলে বিধি-নিষেধ আরােপ করা হয়েছে। তবে কমিশনের অনুমোদিত পরিচয়পত্রধারীদের গাড়ি চলাচল করতে পারবে। পাশাপাশি হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিসহ জরুরি কাজ নিয়োজিত গাড়ি চলাচলে এ বিধিনিষেধ থাকছে না।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment